টিভি পর্দার পরিচিত মুখ অভিনেতা কে এস ফিরোজ পরলোকগমন করেছেন। আজ বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর ২০২০) সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনি মারা গেছেন। জ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। এই অভিনেতা স্ত্রী ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর ২০২০) তাঁকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসকরা নিউমোনিয়া হওয়ার কথা বলেন। এর পর ইনজেকশন দিলে তাঁর অবস্থার আরো অবনতি হয়। ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান।
বাংলা নাটকের পাশাপাশি সিনেমাতেও কে এস ফিরোজের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। তবে তাঁর শুরুটা হয়েছিল মঞ্চনাটক দিয়ে। নাট্যদল ‘থিয়েটার’-এর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে অভিনয় শুরু করেন তিনি। কাজ করেছেন ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’, ‘কিং লিয়ার’ ও ‘রাক্ষসী’ মঞ্চনাটকে।
কে এস ফিরোজ টিভিপর্দায় প্রথম অভিনয় করেন ফখরুজ্জামানের রচনা ও জামান আলী খানের প্রযোজনায় ‘দীপ তবুও জ্বলে’ নাটকে। এতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন ডলি ইব্রাহীম। টেলিভিশনে কে এস ফিরোজের প্রথম আলোচিত নাটক জিয়া আনসারী প্রযোজিত ‘প্রতিশ্রুতি’।
এ ছাড়া তিনি টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় মুখ। বহু একক নাটক, ধারাবাহিক ও টেলিফিল্মে তাঁকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। বহু বিজ্ঞাপনও করেছেন।
কে এস ফিরোজ অল্প কিছু চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। তাঁর প্রথম সিনেমা ‘লাওয়ারিশ’। অভিনয় করেছেন আবু সাইয়ীদের ‘শঙ্খনাদ’, ‘ বাঁশি’, মুরাদ পারভেজের ‘চন্দ্রগ্রহণ’ ও ‘বৃহন্নলা’র মতো প্রশংসিত সিনেমায়।
কে এস ফিরোজের পুরো নাম খন্দকার শহীদ উদ্দিন ফিরোজ। গুণী এই অভিনেতার গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুরের মশাং গ্রামে। তবে তাঁর জন্ম ঢাকার লালবাগে। তার বাবার নাম এ জে এম সাইদুর রহমান। অবশ্য এলাকার মানুষ তার বাবাকে উজির মিয়া নামেই চিনতেন।
অভিনয়ের বাইরেও এক বর্ণিল ক্যারিয়ার কে এস ফিরোজের। ১৯৬৭ সালে কে এস ফিরোজ বাংলাদেশে সেনাবাহিনীতে কমিশন পদে চাকরি নেন। ১৯৭৭ সালে মেজর পদে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। তার আগে ১৯৭৪ সালের ১ নভেম্বর মাধবীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কে এস ফিরোজের তিন মেয়ে। তারা হচ্ছেন—নাদিয়া, সাদিয়া ও রাবেয়া জাহান ফিরোজ।
অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক ও অভিনেতা আহসান হাবীব নাসিম বলেন, নাট্যঙ্গন একজন গুণী অভিনেতাকে হারালো। তিনি আমাদের সংগঠনের আজীবন সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি।
নাসিম আরো জানান, ফিরোজ ভাইয়ের পারিবারিক সূত্রে জানতে পেরেছি মহামারি শুরু হওয়ার আগে তিনি নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন। এর পর সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। ৫ দিন আগে তাঁর আবার নিউমোনিয়া দেখা দেয়, পরে করোনা টেস্ট করলে রেজাল্ট পজিটিভ আসে। তবে এবার আর শেষ রক্ষা হলো না।
—বিনোদন প্রতিবেদক
সংশ্লিষ্ট আরো লেখা
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস
যেসব পণ্যের দাম বাড়বে-কমবে
৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট, আগের ৪৯টি বাজেটের ইতিহাস