
জাহাঙ্গীর জয়েসের কবিতা
.
কবর
কবর থেকে আমাদের দূরত্ব বেশি হলে
দুইশো গজ;
কখনো কখনো দুই তিন হাত
কোনো সময় কোনো দূরত্বই নেই;
এটা কোনো রূপকথা নয়—
বিশ্বাস না-হলে যে বা যারা কবরের দায়িত্বে আছে, তাদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারো।
.
সাইনবোর্ড
দাঁড়াও একটা সাইনবোর্ড নিয়ে আসি;
পূর্বপুরুষের কিছু রক্ত ঢেলে দেই অথবা
আফিম।
.
প্রাসাদ
ভেড়ার পালের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে
প্রাসাদকে চুরমার করে দেয় পাগলের দল!
.
রোবট
চতুর্পাশে যুদ্ধ যুদ্ধ
মানুষ কাঁদে ত্রাসে;
রোবটের তাতে
কিছু যায় আসে!
.
বাগিচা বাজার
আমরা আর যাই না বাগিচা বাজার
বাপ-চাচারা কথায় কথায় বলতেন
বাগিচা বাজার;
আমাদের পরে আর কেউ চিনবে না
বাগিচা বাজার;
তবুও থাকবে বাগিচা বাজার!
.
রাজকাহন
মানুষ এবং মুদ্রায় যে বাজারের কেরামতি—
তা বুঝে না রাজার সহচর;
রাজার পুত্রকন্যা যেমন পায় না ঝড়ের খবর।
.
সবুজ
যদিও তাদের ভেতর নেই কোনো সবুজ
তবুও সবুজের ভেতর ডুবে আছে তাদের
প্রহর।
.
দেয়াল
যখন সে বুঝতে পারলো কী করা উচিৎ
ততদিনে তার হয়ে গেছে জেল;
এখন সে মাকড়সার মতো ঝুলে ঝুলে
ভাবে—কারাগারের দেয়াল কতটুকু উঁচু
হতে পারে।
.
দূরত্ব
পাখি তো চলে গেছে
হাওয়া তুমি চলে যাও;
মাঝে মাঝে দূরত্ব ভালো।
.
জীবন
কোনোদিনও আমি খুঁজিনি তোমায়
হাত থেকে ছুটে যাওয়া জোনাকির
মতো; ছিঁড়ে যাওয়া ঘুড়ির মতো মানুষের
জীবন!
.
পরিবর্তন
আমি দাঁড়িয়ে আছি
ফসলের মাঠগুলো ছোট হয়ে যাচ্ছে
গুলিলাগা পাখির মতো কাঁদছে নদীগুলো!
.
আমি দাঁড়িয়ে আছি
আজ আর কোনো দিগন্ত নেই।
.
অলৌকিক
ইদানীং বেড়ে গেছে অলৌকিক হাত
দূর থেকে মনে হয়—প্রজাপতি, ফড়িংয়ের
মতো নিরীহ, সুন্দর…
.
ইদানীং বেড়ে গেছে অলৌকিক ভ্রমণ
মনে হয় খুব কাছেই সবুজ পাহাড় কিংবা
বিশাল বালুচর…
জাহাঙ্গীর জয়েসের কবিতা
কাটামাথা
মাথা কাটা গেলে এখন আর সমস্যা না
কাটা মাথা নিয়ে আমরা দিব্যি থাকি
গল্প করি
কবিতা লিখি
গান গাই
.
কাটা মাথা নিয়ে উপদেশ দেই
সচিব হই
এমপি
মন্ত্রী
.
মাথা কাটা গেলে এখন আর সমস্যা না
বরং মাথা কাটতে পারলে আরো উন্নতি;
কাটা মাথা এখন খুবই মূল্যবান!
জাহাঙ্গীর জয়েসের কবিতা
বুকের আগুন
অবাক
বিস্ময়
ঘোর কাটে না,
বুকের আগুনে কীভাবে তারা
পুড়িয়ে দেয়
সবকটা সশস্ত্র আঙুল
রাজপথ
প্রাসাদের পর প্রাসাদ!
.
অবাক
বিস্ময়
ঘোর কাটে না,
বুকের আগুনে কীভাবে তারা
গড়ে তুলে
মাইলের পর মাইল
ফসলের ক্ষেত স্বর্গীয় উদ্যান!
3 thoughts on “জাহাঙ্গীর জয়েসের চৌদ্দটি কবিতা”