shubhobangladesh

সত্য-সুন্দর সুখ-স্বপ্ন-সম্ভাবনা সবসময়…

যেসব পণ্যের দাম বাড়বে-কমবে

Budget
Budget

আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুন ২০২১) দুপুর ৩টায় জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা—যা জিডিপির ১৭.৫ শতাংশ।

এবারের বাজেটে কিছু পণ্যের শুল্ক-করহার বাড়ানো-কমানো হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট পণ্যের দাম বাড়তে-কমতে পারে। উল্লেখ্য, বাজেটে শুল্ক-করের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা ঘোষণার পরই সাধারণত কার্যকর হয়।

বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়বে-কমবে

দাম বাড়বে বা বাড়তে পারে যেসব পণ্যে

বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে—আমদানিকৃত মোবাইল, মদ-বিয়ার, সুগন্ধি, সিগারেট, থিম পার্কের রাইড, বিদেশি সবজি, প্রক্রিয়াজাত মাংস, গাড়ির সুরক্ষা কাঁচ।

এ ছাড়া লবণ, যানবাহন নিরাপদ রাখার তালাজাতীয় পণ্যের, পুনর্ব্যবহারযোগ্য লুব বেস অয়েল, পুনর্ব্যবহারযোগ্য লুব্রিকেন্ট অয়েল, নাট-স্ক্রু (তারকাটা জাতীয় পণ্য), প্যারাফিন, মিনারেল অয়েল, সোডিয়াম সালফেট, আমদানিকৃত রড ও অ্যাঙ্গেল, ধান ও গম ভাঙ্গানোর মেশিন।

মোবাইল ফোন : দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে আমদানিকৃত মোবাইলের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ করা হয়েছে। সে কারণে যেসব ফোন দেশে উৎপাদন হয় না, সেসবের দাম বাড়বে। যেমন—আইফোন ও স্যামসাংয়ের প্রিমিয়াম ফোন।

মদ-বিয়ার : এ জাতীয় পণ্য আমদানিতে ২০ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হয়েছে। সে কারণে মদ-বিয়ারের দাম বাড়তে পারে।

সিগারেট : সম্পূরক শুল্ক না-বাড়ালেও, সিগারেটের মূল্যস্তর বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে দামি ব্যান্ডের সিগারেটের দাম বাড়তে পারে। তবে অপরিবর্তিত থাকছে নিম্ন ও মধ্যমানের সিগারেট, বিড়ি, জর্দা ও গুলের দাম।

সুগন্ধি : বিদেশি সুগন্ধি আমদানিতে অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হয়েছে।

থিম পার্কের রাইড : এমিউজমেন্ট পার্ক স্থাপনের রাইডসামগ্রীর ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। সে-কারণে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের খরচ বাড়তে পারে।

টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যার : এসব পণ্যের পরিবেশক ও ডিলারদের নিট কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।

বিদেশি সবজি : দেশি চাষীদের সুরক্ষা দিতে মাশরুম, বিদেশি গাজর, শালগম জাতীয় সবজি আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বসানো হয়েছে। এ ছাড়া গাজর, মাশরুম, কাচামরিচ, টমেটো, কমলা, ক্যাপসিকামের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

প্রক্রিয়াজাত মাংস : তাজা, শুকনা বা হিমায়িত অবস্থায় আমদানিকৃত মাংসে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।

বিদেশি সাবান : এ-জাতীয় পণ্যের ওপরসম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ কারণে দাম বাড়তে পারে।

চুইং গাম : এ-জাতীয় পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে দাম বাড়বে।

বিদেশি বিস্কুট : বিস্কুট ও সমজাতীয় সুগার কনফেকশনারির ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে দাম অনেকটাই বাড়তে পারে।

গাড়ির সুরক্ষা কাঁচ : গাড়ি ও বিমানের সব ধরনের সুরক্ষা কাঁচের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে এ-খাতে ভবিষ্যতে বেশি খরচ হতে পারে।

এ ছাড়া আরো  দাম বাড়তে পারে—শিল্পের লবণ, যানবাহান নিরাপদ রাখার তালাজাতীয় পণ্য, পুনর্ব্যবহারযোগ্য লুব বেস অয়েল, পুনর্ব্যবহারযোগ্য লুব্রিকেন্ট অয়েল, নাট-স্ক্রু (তারকাটা জাতীয় পণ্য), প্যারাফিন, মিনারেল অয়েল, সোডিয়াম সালফেট, আমদানিকৃত রড ও অ্যাঙ্গেল, ধান ও গম ভাঙ্গানোর মেশিন।

বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়বে-কমবে

দাম কমবে বা কমতে পারে যেসব পণ্যে

এবারের বাজেটে কিছু পণ্যের ভ্যাট, আমদানি শুল্ক, আগাম কর অথবা সম্পূরক শুল্কে ছাড় দেয়া হয়েছে। এর ফলে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে।

রড : রড তৈরির প্রধান উপকরণ স্ক্র্যাপ আমদানিতে অগ্রিম কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। উৎপাদনকারীদের কর ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে। এতে স্থাপনা নির্মাণের প্রধান উপকরণ রডের দাম কিছুটা কমতে পারে।

সিমেন্ট : রডের মতো সিমেন্ট তৈরির প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকারের ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে। সে কারণে সিমেন্টের দামে এর প্রভাব পড়তে পারে।

টাইলস : টাইলস কিউব আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে টাইলসের দাম কমবে।

মোটরসাইকেল : দেশে উৎপাদিত মোটরসাইকেলের কাঁচামালের ওপর শুল্ক কমানো হয়েছে। এ কারণে মোটরসাইকেলের দাম কমতে পারে। অবশ্য আমদানিকৃত (সিবিইউ) মোটরসাইকেল কিনতে আগের মতো অর্থ খরচ করতে হবে।

মুড়ি : উৎপাদন পর্যায়ে মুড়ির ওপর ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে প্যাকেটজাত মুড়ির দাম কমতে পারে।

তাজা ফল : ব্যবসায়ী পর্যায়ে ফলের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে ফলের দাম কমতে পারে।

কৃষি যন্ত্রপাতি : থ্রেসার মেশিন, পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার, অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হারভেস্টর, রোটারি টিলার, উইডার (নিড়ানি) ও উইনোয়ার (ঝাড়াই কল) প্রভৃতি কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে আগাম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মাইক্রেবাস : নসিমন ও লেগুনার মতো দুর্ঘটনাপ্রবণ যানবাহন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে সিসিভেদে মাইক্রোবাস আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে।

হাইব্রিড গাড়ি : সম্পূরক কমানোর ফলে জ্বালানিবান্ধব গাড়ির দাম কমতে পারে।

হোম অ্যাপ্লায়েন্স : হোম অ্যাপ্লায়েন্সসামগ্রী, যেমন—ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন, ব্লেন্ডার, জুসার, মিক্সার, গ্রাইন্ডার, ইলেকট্রিক কেটলি, রাইস কুকার, মাল্টি কুকার ও প্রেসার কুকার উৎপাদনে উপকরণ-যন্ত্রাংশ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

স্যানিটারি ন্যাপকিন : দাম কমতে পারে স্যানিটারি ন্যাপকিনের। কারণ দেশে উৎপাদিত ন্যাপকিনের সমুদয় মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কাঁচামাল আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। 

করোনার কিট : সুরক্ষা সামগ্রীতে শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা আগেই ছিল। এবার করোনা শনাক্তের আরটি-পিসিআর কিট তৈরির কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে।

অটিজম সেবা : এ সেবার ওপর ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মেডিটেশন সেবার ওপর ভ্যাট অব্যাহতি এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে।

ক্যানসারের ওষুধ : ক্যানসারের ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামালে আবার শুল্ক ছাড় দেয়া হয়েছে। েএর ফলে ক্যানসারের ওষুধ উৎপাদনে ব্যয় কমবে। এ ছাড়া ওষুধ শিল্পের আরো কিছু কাঁচামালে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে।

মেডিকেল ডিভাইস : বেশ কিছু মেডিকেল যন্ত্রাংশ উৎপাদনে উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

ডায়ালাইসিসের টিউব : ডায়ালাইসিস সেবায় ব্যবহার করা ব্লাড টিউবিং সেটের কর কমানো হয়েছে।

দেশি এলপিজি সিলিন্ডার : দেশে এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনে কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

ইস্পাত : ইস্পাতের ওপর সুনির্দিষ্ট শুল্ক টনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।

পোল্ট্রি ও মাছের খাবার : উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে মুরগি, মাছ ও গবাদিপশুর খাবারের দাম কমানোর সুযোগ তৈরি হবে।

শৌচাগারের প্যান : গ্রামের মানুষের স্যানিটেশন সুবিধা বাড়াতে দেশে উৎপাদিত লং প্যানের সম্পূরক শুল্ক তুলে নেওয়া হয়েছে। এতে আগে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ছিল।

খেলনা সামগ্রী : দেশে খেলনা উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে সাত ধরনের যন্ত্রাংশ ও উপকরণে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ কারণে দেশে তৈরি খেলনার দাম কমতে পারে।

—নিজস্ব প্রতিবেদক, শুভ বাংলাদেশ

…………………

পড়ুন

৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ২০২১-২২

আগের ৪৯টি বাজেটের ইতিহাস

শেয়ার করে আমাদের সঙ্গে থাকুন...