
খুচরো কথা চারপাশে
ফিরবে না, সে ফিরবে না
সুনীল শর্মাচার্য
ফিরবে না, সে ফিরবে না
২০২০-র আগের পৃথিবীর সঙ্গে, পরের পৃথিবীর আর কোনো মিল রইল না। খুঁদকুড়ো জড়ো করা যে-অনিশ্চিতের লক্ষ্যে, সেই অনিশ্চিত এসে এখন চৌকাঠে কলিং বেল বাজাচ্ছে। মানুষ কোথায় মুখ লুকোবে বুঝতে পারছে না। যে-সুদূর ভবিষ্যতের ওপর দাঁড়িয়ে জমা খাতার হিসেব-নিকেশ, সেই অনাগত দিন এখন জলে ডুবছে।
সোনার তরী টাইটানিক হয়ে ডুবছে পাড়ের কাছে। একটা ভাইরাস এসে ফুটো করে দিয়ে গিয়েছে যাবতীয় অহং। জীবনের অনিত্য সূত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আবার। যখন অস্তিত্বই বিপণ্ন তখন কীসের আখের গোছানো!
খবরের কাগজ আশ্বাস বিলোচ্ছে, এই এলো বলে টিকা। টিকা এলেই সভ্যতার কপালে জয়টিকা, কিন্তু পাদটীকা হল এই যে, শেষ কীভাবে আসতে পারে, তার একটা আভাস রেখে গেল এই সাল। প্রযুক্তির উড়াল যে একদিন মানুষকে আর বাঁচাতে পারবে না, এই সারকথা বুঝে গিয়েছে মানুষ।
মানুষ আর মানুষের মুখ দেখতে পাবে কি? যদি মাস্কে ঢাকা থাকে মুখ, তা হলে আমরা নতুন করে চোখ পড়তে শিখব। কখন রাগছে, কখন হাসছে, সব চোখ দেখে বুঝে নেবে মানুষ।
এতদিন ঢাকা মুখ দেখেছি শুধু হানাদারদের, এবার দুনিয়ার সব মুখে একই রকম আড়াল। আতঙ্ককে দেখতে তো একরকমই হবে!
এই শীতকাল যেন শুধুই শীতকাল নয়, পাতাঝরা, সাদা কফিনের এক বরফ আস্তরণ। মুখঢাকা মানুষের শব নিয়ে হাঁটছে মুখঢাকা শববাহকের দল। দেখে মনে হয় যেন কবেকার এক প্রস্তর যুগ। যেখানে বসত করে অনন্ত এক শীতের দেশ।
যত দূরে দূরে যাবে বন্ধু, বুঝতে পারবে, আগের মতো জীবন আর ফিরবে না কখনো!
…………………
পড়ুন
কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের একগুচ্ছ কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের ক্ষুধাগুচ্ছ
লকডাউনগুচ্ছ : সুনীল শর্মাচার্য
সুনীল শর্মাচার্যের গ্রাম্য স্মৃতি
গল্প
এক সমাজবিরোধী ও টেলিফোনের গল্প: সুনীল শর্মাচার্য
আঁধার বদলায় : সুনীল শর্মাচার্য
প্রবন্ধ
কবির ভাষা, কবিতার ভাষা : সুনীল শর্মাচার্য
মুক্তগদ্য
খুচরো কথা চারপাশে : সুনীল শর্মাচার্য
‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ পাঠ্যান্তে
ভারতের কৃষিবিল যেন আলাদিনের চেরাগ-এ-জিন
9 thoughts on “ফিরবে না, সে ফিরবে না”