shubhobangladesh

সত্য-সুন্দর সুখ-স্বপ্ন-সম্ভাবনা সবসময়…

বন্যাদুর্গত ৯০ হাজার পরিবার পাবে উঁচু পাকা বাড়ি

90,000 flood-affected families will get high-rise houses

90,000 flood-affected families will get high-rise houses

90,000 flood-affected families will get high-rise houses

প্রধান প্রতিবেদক : দেশে বন্যাদুর্গত পাঁচ জেলার ৯০ হাজার পরিবারকে উঁচু পাকা বাড়ি করে দেবে সরকার। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে এসব পরিবারের জন্য বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য একটি করে টিউবওয়েল, কর্মসংস্থানের জন্য ছাগল পালন ও ছোটখাটো সবজি বাগান করে দেওয়া হবে।

এ-জন্য ১৩ বিলিয়ন ডলারের নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউণ্ডেশন পিকেএসএফ-এর অধীন কয়েকটি এনজিও এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ কর্মসূচি শেষ হবে। পিকেএসএফ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) অর্থায়নে ‘এক্সটেন্ডেড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ফ্লাড (ইসিসিপি-ফ্লাড)’ নামের নতুন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে পিকেএসএফ। কাগজে কলমে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করবে পিকেএসএফ।

প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে দেশের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও জামালপুর এই পাঁচ জেলার ৯০ হাজার পরিবারকে শনাক্ত করা হয়েছে যেখানে অনেকের বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এসব পরিবারের জন্য উঁচু পাকা বাড়ি, বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য একটি করে টিউবওয়েল, কর্মসংস্থানের জন্য ছাগল পালন ও ছোটখাটো সবজি বাগান করে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিকেএসএফের পরিচালক (পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন) ড. ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমদ জানিয়েছেন, চার বছর মেয়াদি প্রকল্পটি কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও জামালপুরে বন্যা মোকাবিলায় কাজ করবে। ১৩ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে ৯০ হাজার পরিবার এবং পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবেন। বন্যার প্রভাব, দরিদ্রতা, জীবনমান, মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বিবেচনায় আপাতত এই পাঁচ জেলাকে বাছাই করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অর্থপ্রাপ্তি সাপেক্ষে অন্যান্য জেলায়ও এ প্রকল্পটি সম্প্রসারিত হতে পারে।’

প্রকল্প সম্পর্কে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে সরকার দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধপরিকর। তবে এই লক্ষ্য পূরণে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো জলবায়ু পরিবর্তন অভিঘাত। প্রতি বছর দেশের প্রায় ২৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার বন্যাকবলিত হয়। নতুন এ প্রকল্পটি সময়োপযোগী। দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলার বিষয়টি সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

পরিবেশ অধিদফতর সূত্র জানায়, বাংলাদেশকে জলবায়ুর এই অভিঘাত মোকাবিলার জন্য জিডিপির কমপক্ষে এক শতাংশ ব্যয় করতে হয়। জলবায়ু পরিবর্তন কার্যকরভাবে মোকাবিলায় অভিযোজনের পাশাপাশি প্রশমনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

প্রকল্প সম্পর্কে পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এই প্রকল্পটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এক লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে।

তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত টেকসইভাবে মোকাবিলায় মানুষের সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ জানান, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) অর্থায়নে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া নতুন প্রকল্পটি উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষে অবস্থান করছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানিয়েছেন, ভৌগোলিকভাবেই কুড়িগ্রাম জেলাটি বন্যাপ্রবণ জেলা। এ জেলায় মানুষের বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। আবার বন্যার পানি নামতে শুরু করলে নদীভাঙন শুরু হয়। এতে মানুষ বাড়িঘর হারিয়ে রাস্তায় নেমে যায়। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এসব জেলার মানুষের জন্য বিভিন্ন প্রকার সহায়তা রয়েছে। এর মধ্যে বাড়িঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রকল্পও রয়েছে। এর বাইরে যদি পিকেএসএফ এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে, তাহলে সাধারণ মানুষই উপকৃত হবে।’

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, এখনো এ ধরনের কোনো প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না। তবে এ প্রকল্প বিষয়ে পিকেএসএফ’র উদ্যোগে আয়োজিত একটি কর্মশালায় আমাদের জেলা প্রশাসনের একজন এডিসি ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন। তিনি হয়তো বিষয়টি ভালো জানবেন। তবে এ ধরনের প্রকল্প এ জেলায় বাস্তবায়ন হলে জেলার সাধারণ বানভাসী মানুষই উপকৃত হবেন বলে আশা করি।

About The Author

শেয়ার করে আমাদের সঙ্গে থাকুন...