খুচরো কথা চারপাশে
বেগুনে আগুন
সুনীল শর্মাচার্য
বেগুনে আগুন
‘—কত সাধ যায় রে চিতে, বেগুন গাছে আঁকশি দিতে!’ এই কথাটা শেষ পর্যন্ত ফলে গেল। বেগুনের কিলো ষাট টাকা। সত্তুর টাকা। সুতরাং, আঁকশি দিয়ে টেনে নামিয়ে না-আনলে হাতে পাওয়া ভার।
সে আঁকশি আর ক’জনের হাতে আছে? অধিকাংশই যেন অক্ষম দর্শক। থলিতে আর যাই থাক, বেগুন নেই। পাড়ার তেলেভাজার দোকানে নোটিশ—বেগুনি চেয়ে লজ্জা দেবেন না। বেগুনে আগুন
দোকানদারের সাফ কথা, কড়ে আঙ্গুলের মতো ওই বেগুনে বেগুনি হয় না! কোনো গুণ নেই বলেই কি বস্তুটির নাম বেগুন? বাজারে এবং হেঁসেলে শব্দতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা চলে।
কে বা কারা নাকি ল্যাব-এ পরীক্ষা করে বলে গেছেন বেগুনি রঙের ওই সবকটি ভিটামিনে
টইটুম্বুর। আপাতত বেগুনি-বিবাগী বলেন, ওসব স্রেফ ধোঁকাবাজি। বেগুনে কিছু নেই। গত বছরও বেগুনের দাম যাচ্ছেতাই বেড়ে গিয়েছিল।
একদা এক বাঙালি দম্পতি পুরীতে রথ দেখতে গিয়ে প্রিয়বস্তু হিসাবে জগন্নাথের পাদপদ্মে ত্যাগ করে এসেছিলেন এই বেগুন।
সৈয়দ মুজতবা আলীর সেই গল্পটি মনে পড়ে। পূর্ব বাংলার ক্রেতা বলছেন—বাইগন কত করে? কলকাতার বিক্রেতা বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘কি বাইগন বাইগন করছেন? বাঙালের উত্তর :
বাইগনকে তবে কি প্রাণনাথ বলতে হবে?’
হায় বাঙালির সেই প্রাণনাথকে আজ আর আঁকশি ছাড়া ছোঁয়া যাচ্ছে না!
…………………
পড়ুন
কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের একগুচ্ছ কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের ক্ষুধাগুচ্ছ
লকডাউনগুচ্ছ : সুনীল শর্মাচার্য
গল্প
প্রবন্ধ
কবির ভাষা, কবিতার ভাষা : সুনীল শর্মাচার্য
মুক্তগদ্য
খুচরো কথা চারপাশে : কত রকম সমস্যার মধ্যে থাকি : সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : শক্তি পূজোর চিরাচরিত : সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : ভূতের গল্প : সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : বেগুনে আগুন: সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : পরকীয়া প্রেমের রোমান্স : সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : মুসলমান বাঙালির নামকরণ নিয়ে : সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : এখন লিটল ম্যাগাজিন : সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : যদিও সংকট এখন : সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : খাবারে রঙ : সুনীল শর্মাচার্য
খুচরো কথা চারপাশে : সংস্কার নিয়ে : সুনীল শর্মাচার্য
13 thoughts on “বেগুনে আগুন”