খুচরো কথা চারপাশে
রাজনীতি বোঝো, অর্থনীতি বোঝো! বনাম ভারতের যুবসমাজ
সুনীল শর্মাচার্য
রাজনীতি বোঝো, অর্থনীতি বোঝো! বনাম ভারতের যুবসমাজ
হে জাতির ভবিষ্যত তরুণ-তরুণীরা! তোমাদের মধ্যে এখন বিরাট অংশ ভাবো ‘I hate politics’, ভাবো ‘No interest!’ এখন দেখছি তারাই Facebook social media-তে বলছে, তাদের বাবা-মা অক্সিজেন পাচ্ছেন না, ভেন্টিলেটর পাচ্ছেন না, হাসপাতালে বেড পাচ্ছে না—এইসব লিখে গলা চিল্লায়ে ফাল্লা ফাল্লা করছেন।
ন… পুত! পলিটিক্স বোঝো নাই? নিজেকে নিউট্রাল প্রমাণ করার চেষ্টা করেছো আজীবন, শালা সুশীলের বাচ্চা সুশীল! পাগল ছাড়া আর কেউ এই যুগে নিউট্রাল থাকতে পারে না রে বোকাচোদা!
ফেসবুকে লাইক কমে যেতে পারে, কেউ কেউ বিপক্ষে চলে যেতে পারে—এই ভয়ে কোনোদিন হক কথা কও নাই। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে কবিতা লিখেছো—ওই ফুল-পাখি-লতা-পাতা নিয়ে। মদনের বাচ্চা মদন। নিজের পোদ ঘুরিয়ে, বুক উঁচিয়ে ফুট পোস্ট করাটাই তোমার ফেসবুকিও এক্টিভিটি।
তোমাকে গড অলমাইটি মেধা দিয়েছে। সত্যিকার মানুষ হলে সেই মেধা দিয়ে, মানুষের অধিকার নিয়ে দু’চার লাইন হলেও লিখতে। কিন্তু তুমি কী লিখেছো? না এই সময়ে তুমি লেখা শুরু করছো—‘আমি অদ্ভুত হয়ে লক্ষ্য করলাম… আমি রাজনীতি বুঝি না… আমি হেন… আমি তেন… আমি শিশু!’
আরে গাণ্ডু, রাজনীতিটা ঠিকঠাক বুঝতে পারলে, হাসপাতালের আইসিইউ বেডও পেতে, অক্সিজেনও পেতে। এখনো সময় আছে। পড়াশোনা করো। রাজনীতি বোঝো। অর্থনীতি বোঝো!
ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে দেশ চলে নারে মদনা! দেশ চলে রাজনৈতিক সিস্টেমে। তোমার ভেন্টিলেটর বা অক্সিজেন সব ব্যবস্থাও রাজনৈতিক সিস্টেমই করে। ডাক্তার তোমাকে অক্সিজেন দিতে পারে না। হাসপাতালে বেড দিতে পারে না।
তোমার জীবন রাজনীতিবিদদের কাছে বন্ধক দেওয়া। তাদেরকে প্রশ্ন করো, তোমার অক্সিজেন নাই কেন? হাসপাতালে বেড নাই কেন? প্রশ্ন করে, তারপর বিপদে পড়ার হিম্মত না-থাকলে, মার খাও বেকুবের বাচ্চা বেকুব!
তোমাদের পলিটিকাল কারেক্টনেস ধরে রাখা, অন্যায়কে অন্যায় না-বলতে পারা, নিজের অধিকার ভূলুন্ঠিত হবার সময়ে চুপ থাকা, ব্যাংকগুলো লুঠপাট হয়ে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হওয়ার সময়ে না-দেখার ভান করা—এইসব পাপের ফসল আজকের এই দেশ।
তোমরা গাড়মারা খাও সুশীলরা। করোনা ভাইরাস রে বলো—তুমি সুশীল; তোমাকে যেন ছেড়ে দেয়!
উপসংহার : রাজনীতি-নিরপেক্ষতা নামক পলায়নপর মানসিকতার infectivity আজ করোনার চেয়েও মারাত্মক!
…………………
পড়ুন
কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের একগুচ্ছ কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের ক্ষুধাগুচ্ছ
লকডাউনগুচ্ছ : সুনীল শর্মাচার্য
সুনীল শর্মাচার্যের গ্রাম্য স্মৃতি
গল্প
এক সমাজবিরোধী ও টেলিফোনের গল্প: সুনীল শর্মাচার্য
আঁধার বদলায় : সুনীল শর্মাচার্য
প্রবন্ধ
কবির ভাষা, কবিতার ভাষা : সুনীল শর্মাচার্য
মুক্তগদ্য
খুচরো কথা চারপাশে : সুনীল শর্মাচার্য
‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ পাঠ্যান্তে
ভারতের কৃষিবিল যেন আলাদিনের চেরাগ-এ-জিন
বাঙালিদের বাংলা চর্চা : খণ্ড ভারতে
ভারতে চীনা দ্রব্য বয়কট : বিষয়টা হাল্কা ভাবলেও, সমস্যাটা কঠিন এবং আমরা
রাজনীতি বোঝো, অর্থনীতি বোঝো! বনাম ভারতের যুবসমাজ
25 thoughts on “রাজনীতি বোঝো, অর্থনীতি বোঝো! বনাম ভারতের যুবসমাজ”