সহশিল্পী সুশান্ত সিং রাজপুত প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টলিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি লিখেছেন, আমি কখনো মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার বিদ্বেষ থেকে মুক্তি পাব না।
কেন মিথ্যে বলছেন, শান্তিতে ঘুমান? আমরা কেউ তাকে শান্তিতে ঘুমাতে দিচ্ছি না। সে কবরে থেকেও যুদ্ধ করছে।
দুঃখিত সুশান্ত, আমি আপনার হাসি-খুশি দিকটাই মনে রাখবো।
গত রোববার (১৪) নিজ ফ্ল্যাটে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলিউড অভিনেতা সুশান্ত। জানা যায়, ছয় মাস ধরে হতাশায় ভুগছিলেন তিনি।
এই অভিনেতার মৃত্যুর পর অনেকেই অভিযোগ করছেন, বলিউডের ইঁদুর দৌড়ে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন সুশান্ত।
অনেকেই করন জোহর, সালমান খান, সঞ্জয় লীলা বানসালিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছোড়েন।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যম থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ঠিক তখনই এমন মন্তব্য করলেন স্বস্তিকা মুখার্জি।
সুশান্ত সিং রাজপুত অভিনীত শেষ সিনেমা ‘দিল বেচারা’। এতে তার সঙ্গে অভিনয় করেছেন স্বস্তিকা মুখার্জি।
এর আগে দিবাকর ব্যানার্জি পরিচালিত ‘ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সি’ সিনেমাতেও সুশান্তের সহ-অভিনেত্রী হিসেবে দেখা যায় স্বস্তিকাকে।
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (জন্ম ১৩ ডিসেম্বর ১৯৮০) একজন ভারতীয় বাঙালি মডেল এবং অভিনেত্রী। তিনি অভিনেতা শন্তু মুখোপাধ্যায়ের কন্যা।
স্বস্তিকার প্রথমে টেলিভিশন ধারাবাহিক দেবদাসী অভিনয়ের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
২০০৩ সালে তিনি উর্মী চক্রবর্তী পরিচালিত হেমন্তের পাখি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন।
তার অভিনীত প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান রবি কিনাগী পরিচালিত মাস্তান চলচ্চিত্রে।
ব্যক্তিগত জীবন
স্বস্তিকা মুখার্জী ১৯৮০ সালের ১৩ ডিসেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।
ছোটবেলা থেকে তিনি তার পিতা শন্তু মুখার্জীর সাথে সাদাসিধেভাবে জীবন যাপন করছেন, সাথে আরো রয়েছেন তার ছোট বোন ‘অজপা’ এবং তার মা ‘গোপা’।
তার প্রিয় চলচ্চিত্র ছিল ‘চিটঠি চিটঠি ব্যাং ব্যাং’, ‘মেরী পপিনস’ এবং ‘দ্যা সাউন্ড অব মিউজিক’। তিনি তার শিক্ষা জীবন কলকাতার কারমেল স্কুল, ‘সেন্ট তেরেসা স্কুল’ এবং ‘গোখেল মেমরিয়াল স্কুল’ থেকে শুরু করেছিলেন।
১৯৯৮ সালে ১৮ বছর বয়সে তিনি বিখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাগর সেনের পুত্র প্রমিত সেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
কিন্তু তাদের বিবাহিত জীবন সুখী ছিল না। তাদের দম্পতি জীবন পৃথক হওয়ার আগে মাত্র দুই বছর স্থায়ী ছিল।
তিনি তার স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক অপব্যবহার এবং গর্ভবতী অবস্থায় তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন (এটা অবশ্য পরে বরখাস্ত করা হয়)।
মুখার্জীর ভাষ্যমতে, সেনের সাথে ২০০০ সালে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য মামলা দায়ের করেন, কিন্তু পরবর্তীতে তার মন পরিবর্তন হয় এবং তিনি অভিনয়ে সফল হয়ে ওঠেন।
তার বিবাহিত জীবন থেকে এক মেয়ে অন্বেষা ২০০০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
২০০১ সালে মুখার্জি আনন্দ শঙ্কর সেন্টারে ‘কালচার লার্নিং ড্যান্স’-এ ভর্তি হন, যেখানে তিনি তনুশ্রী শংকরের কাছে থেকে নৃত্যর তালিম নেন।
তিনি তখন জিতের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু কোয়েল মল্লিকের কারণে তার তা বেশিদিন টিকে থাকেনী।
পরবর্তী সময়ে তিনি পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সাথে ‘ব্রেক ফেল’-এর শ্যুটিং সেটে তার সাথে সম্পর্ক শুরু করেন।
কিন্তু তিনি সেই সময়কার প্রথিত নিয়ম অনুযায়ী প্রমিত সেনের বিবাহিত স্ত্রী ছিলেন। ২০১০ সালে তারা আলাদা হওয়ার পর স্বস্তিকা লন্ডন চলে যান।
অভিনয় জীবন
যখন তিনি ইতিহাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক স্তরে পাঠরত ছিলেন তখন থেকে টিভি সিরিয়াল দেবদাসীতে অভিনয় করার সুযোগ পান।
এর পর তিনি অন্য টিভি সিরিয়ালেও অভিনয় করেন, যেমন আকাশের নিচে এবং প্রতিবিম্ভ।
২০০৩ সালে তিনি তার বড় পর্দায় উর্মী চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘হেমন্তের পাখি’ নামক ছবির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন। যদিও তিনি ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
তার অভিনীত প্রথম প্রধান চরিত্র হল রবি কিনাগী পরিচালিত ‘মাস্তান’। মাস্তান ছবির চিত্রগ্রহণ চলাকালীন সময়ে তিনি তার সহকারী তারকা জিতের সঙ্গে প্রণয় সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ ওঠে।
তারা একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন, যেমন—ক্রান্তি, কৃষ্ণকান্তের উইল এবং পার্টনার। মুখার্জি বর্তমানে বাই বাই ব্যাংকক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।
এ ছাড়া তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে মুম্বাই কাটিং-এ অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন। [সূত্র : উইকিপিডিয়া]
—ডেস্ক বিনোদন
সংশ্লিষ্ট আরো লেখা
শাহীন সরদার : কবিতার গানে তাঁর বেঁচে থাকা
চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের নায়ক ওয়াসিম চলে গেলেন
সংগীতশিল্পী মিতা হকের পরলোকগমন