shubhobangladesh

সত্য-সুন্দর সুখ-স্বপ্ন-সম্ভাবনা সবসময়…

২০০ টাকা পুঁজিতে এখন ৩০ লাখ টাকার ফুলের বাগান

flower garden

30 lakh flower garden

flower garden

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মাত্র ২০০ টাকা পুঁজিতে বিশ্বমানের ফুলের বাগান গড়ার স্বপ্ন বুনেছিলেন মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা তানভীর। তার নার্সারিতে এখন প্রায় ৩০ লাখ টাকার দেশি-বিদেশি ফুল ও গাছের সমাহার

হরিরামপুর নামের সঙ্গে পুরো মানিকগঞ্জকে সমৃদ্ধ করেছে তানভীরের ফুলের বাগান। এই ফুলের বাগান দেশের অন্য উদ্যোক্তা তরুণদের মডেল হতে পারে বলে মনে করেন কৃষিবিদরা।

শৈশব থেকে বাড়ির আঙিনায় মায়ের গড়ে তোলা বাহারি ফুলের বাগান দেখে বেড়ে উঠেছেন তানভীর। ফুলের প্রতি ভালোবাসা ও আগ্রহ ছিল বরাবর। সে-কারণে পিতার ভিটায় গড়ে তুলেছেন একটি ফুলের নার্সারি।

লেখাপড়া করেছেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ইংরেজি সাহিত্যে। চাকরির পেছনে হন্যে হয়ে না-ঘুরে ফুল ভালোবেসে গ্রামে ফিরেছেন।

তানভীরের বাবা প্রয়াত আব্দুল মোন্নাফ কৃষক ছিলেন। তাই ছাত্রজীবন থেকেই তার ইচ্ছে ছিল কৃষি নিয়ে কাজ করা।

এখনকার দিনে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বিসিএস দিয়ে প্রথম শ্রেণির মর্যাদাপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার। কিন্তু তিনি ২০১৪ সালে ফুল গাছ উৎপাদন ও বিপণনের মতো চ্যালেঞ্জিং কাজকে পেশা হিসেবে নেন।

বলড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে নিজ বাড়ির ২৪ শতাংশ জমিতে ফুল ও ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন তানভীর। তিনি বলেন, আমার নার্সারিতে এখন পাঁচ শতাধিক পদ্ম, জলজ ফুল ও ফল গাছের সমারোহ। এগুলোর বেশিরভাগ বীজ বা কাণ্ড থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভারত, পাকিস্তান, আমেরিকা, চীন, ভিয়েতনাম, ইরানসহ বিশ্বের ২৫টি দেশ থেকে সংগ্রহ করেছি।

তানভীরের বাগানে শোভা পাচ্ছে—বিভিন্ন রঙের দোলনচাঁপা, ১০৭ প্রজাতির শাপলা, ৫৬ প্রজাতির পদ্ম, শতাধিক প্রজাতির জবা, ৫০ প্রজাতির ফল গাছ, পার্সিয়ান জুঁইয়ের মতো ৪০ প্রজাতির সুগন্ধি গাছ, হলুদ শিমুল, বিদেশি আরো ৫০ প্রজাতির নানা গাছ।

বাগানের অন্যতম আকর্ষণ—হাজার পাঁপড়ির পদ্ম। এতে এক হাজার পাঁপড়ি হয়। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ঔষধি ও দেশীয় ফলের গাছ।

তরুণ এই উদ্যোক্তার দাবি, তার ফুল গাছের প্রায় সব ক্রেতা বিত্তবান শ্রেণির মানুষেরা। কারণ এগুলো একটু দামি। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অপেক্ষাকৃত সচ্ছল ও রুচিশীল মানুষের পছন্দ এসব ফুল। শৌখিন ক্রেতারা অনলাইনের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে গাছ কিনে থাকেন।

হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল গাফফার মনে করেন, হরিরামপুর তথা মানিকগঞ্জকে সমৃদ্ধ করেছে তানভীরের ফুলের বাগান। তার কথায়, এমন ব্যতিক্রম নার্সারি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাকে দেখে দেশের অন্য উদ্যোক্তা অনুপ্রাণিত হবেন।

অন্য কেউ এমন ফুলের বাগান করতে চাইলে কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি।

About The Author

শেয়ার করে আমাদের সঙ্গে থাকুন...