‘অটো প্রমোশন’ নয়, মূল্যায়ন করেই নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবেন শিক্ষার্থীরা—এই সিদ্ধান্ত হয়েছে আজ। করোনাভাইরাস, কোভিট-১৯-এর কারণে চলতি বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করা হলেও, শিক্ষার্থীরা ‘অটো প্রমোশনে’ নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ পাবে না। যে কোনো পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে তাদের নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে। আর কিসের ভিত্তিতে এই মূল্যায়নটি হবে তার জন্য কয়েকটি বিকল্প ঠিক করেছে শিক্ষাবোর্ডগুলো।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০) বিকেলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে সভার সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। রাজধানীর বকশি বাজারে ঢাকা বোর্ডে অনুষ্ঠিত এই সভায় শিক্ষাবোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানেরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে এই সভায় আটকে থাকা উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ মহামারির এই সময়ে এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে—সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শিক্ষাবোর্ডগুলোর নেই। এই সিদ্ধান্ত নিবে সরকার।
আর ষষ্ঠ, সপ্তম এবং নবম শ্রেণির মূল্যায়নের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কাজ করছে। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এ বছর জেএসসি-জেডিসিতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২৫ লাখ। করনোর কারণে গত ২৭ আগস্ট সরকার চলতি বছরের এই দুই পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করে। এর আগে একই কারণে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
জেএসসি ও জেডিসি বাতিলের সময়ই বলা হয়েছিল স্ব স্ব বিদ্যালয়ে মূল্যায়ন করবে। আজকের সভায় মূলত জেএসসি পরীক্ষা না-হওয়ায় মূল্যায়নটি কীভাবে হবে—সেটি ঠিক করা হয়েছে।
‘অটো প্রমোশন’ নয়, মূল্যায়ন করেই নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবেন শিক্ষার্থীরা
কীভাবে হবে মূল্যায়ন
ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, জেএসসি পরীক্ষা বাতিল হলেও, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থায় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের যে কোনো পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেডু) একটি নির্দেশনা তৈরি করে দেবে।
আর এই নির্দেশনা তৈরির মূলনীতি হবে—করোনা শুরুর আগে ১৫ মার্চ পর্যন্ত যতটুকু ক্লাস হয়েছিল সেটি এবং এর পর সংসদ টিভি ও অনলাইনে যতটুকু ক্লাস হয়েছে, সেটিকে বিবেচনা নিয়ে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা।
এর সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ক্লাস শুরু করা গেলে—সেই ক্লাসগুলোর ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা। আর না খুললে ১৫ মার্চ পর্যন্ত নেওয়া ক্লাস এবং টিভি ও অনলাইনে নেওয়া ক্লাসের ভিত্তিতে মূল্যায়নটি হবে।
আগামী ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ এই মূল্যায়নটি করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে—তখন যদি সশরীরে মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়, তাহলে সেটা করা। আর যদি সম্ভব না হয়, তাহলে অনলাইনসহ প্রতিষ্ঠানগুলো যার যার সামর্থ্যানুযায়ী এই মূল্যায়নটি করবে।
এই মূল্যায়নটি পরীক্ষার মাধ্যমে হবে, নাকি অন্য উপায়ে করা হবে—সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সুবিধামতো ঠিক করে নেবে। তবে মূল্যায়ন একটি হবেই।
আর, পাঠ্যসূচির যে বিষয়গুলো পড়ানো সম্ভব হবে না, তা নবম শ্রেণির ক্লাসের সঙ্গে সংযোগ করে দেওয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক. জিয়াউল হক।
তবে, শিক্ষার্থীরা সবসময় ভালো করবেন, এই প্রত্যাশা।
—শুভ বিশেষ প্রতিবেদক
সংশ্লিষ্ট আরো লেখা
করোনায় আরো ১৭৮ জনের মৃত্যু
টানা ২০ দিন পর দৈনিক মৃত্যু দুইশ’র নিচে ১৯৭ জন
করোনায় আরো ২১৫ জনের মৃত্যু