খুচরো কথা চারপাশে
ডায়েরির ছেঁড়া পাতা
সুনীল শর্মাচার্য
ডায়েরির ছেঁড়া পাতা
১
মধ্যযুগে অনেক সম্রাট, রাজাই রাজতন্ত্র এবং
একনায়কতন্ত্রের ক্রাইসিস নিয়ে রাজনীতি করেছে।…
ভারত কি সেই দিকে যাচ্ছে?!
.
২
হিন্দুদের শিক্ষে হলো না! তারা বর্ণবাদকে ভালোবাসে।
আর হিন্দু হয়ে একে-অন্যকে ঘৃণা করে। এ কেমন সনাতন? ধর্ম তোমার??
এত এত যুগ পরেও কেন ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র বা দলিত?
ভাগে ভাগে দুর্বল, এক জোট নেই।
কম্বলের লোম বাছতে বাছতে তোমার সনাতন শেষ!
তখন ধর্ম তোমাকে আফিম বিষে শেষ করে দেবে!!
.
৩
মানুষের বড় বিপদ!
.
৪
আগামী দিনগুলো কি ভয়ানক হতে পারে ভেবে
আতঙ্কিত…
.
৫
সমাজপতিরাই আমাদের সমাজকে নষ্ট করে,
রাজনীতিবিদরাই আমাদের দেশকে নষ্ট করে…
.
৬
যে নেই—তার জন্যই আমার সব আয়োজন এবং উৎকণ্ঠা!
.
৭
কথায় বলে, পরের ধনে পোদ্দারি সকলেই মারতে পারে! তাই জনগণের টাকায় (কর/জিএসটি/খাজনা ইত্যাদি) আমাদের সরকারও কতকিছু করতে পারে!
নাম কেনে, গলা ফাটায়—তার সরকার জনগণের জন্য হেনাতেনা কতকিছু করছে। ব্যাপার দাঁড়ালো এই, জনগণের শিল, জনগণের নোড়া হাতে পেয়ে জনগণেরই ভাঙছে দাঁতের গোড়া!
.
৮
হার থেকে শিক্ষা নাও…
.
৯
এখন দেখতে পাচ্ছি—রাজনীতিতে আদর্শ,
সততা বলে কিছু নেই…
.
১০
অন্যকে চিনতে গেলে, নিজেই অচেনা!
.
১১
আমরা সবাই আবহমান সময়ের সাক্ষী ছাড়া আর কিছু নই! আবার ঘটিত ঘটনাগুলোর একজন প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়া আর কিছুই নই!
দুঃখ থাকে ভাঙনের সাক্ষী হয়ে। রাজনৈতিক সচেতনতা থাকা বা না-থাকা বিষয় নয়। সবার থাকে না। আমারও নেই। তবু জানি, কয়েকটি কথা যেমন প্রকৃতি, সদ্ভাব, সম্প্রীতি ও শান্তি।
আমার প্রতি মুহূর্তে মনে হয় এই বিশাল বৈচিত্র্যময় ভারতবর্ষ আঞ্চলিকতার আর ধর্মের ফিকিরে ভেঙে যুগোস্লাভিয়ার মতো পরিণতিতে না পৌঁছায়…!
.
১২
এক জীবনে সব পাওয়া যায় না…
.
১৩
তুমি কাউকে ঠকালে—একদিন তোমাকে ঠকতে হবে।
কাউকে প্রতারণা করলে—তোমাকে প্রতারিত হতে হবে একদিন!
সর্বস্বান্ত হতে হবে প্রকৃতির নিয়মে…
.
১৪
প্রাণং সারঃ
অতএব, নিজের প্রাণ নিজেই বাঁচান। কেউ কারোর প্রাণ এখন বাঁচাবে না!…
.
১৫
দলতন্ত্র নিপাত যাক
গণতন্ত্র বেঁচে থাক
.
১৬
কৌতূহল অনেক সময় আমাদের বড়সড় সমস্যার দিকে টেনে নেয়!
.
১৭
একমাত্র আমার শত্রুই আমাকে সর্বদা অনুসরণ করে…
.
১৮
নেপোটিজম আজ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে
.
১৯
সংসদে নেতারা যে শপথবাক্য পাঠ করেন, বাস্তবে তার উল্টোটা করেন!
এটাই দুর্ভাগ্য আমাদের…
.
২০
অপরিণামদর্শী মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে দিন দিন বেড়েই চলেছে…
.
২১
আজকের দিনে খাঁটি জিনিসের মূল্য কম,
ভেজালের কদর বেশি!
.
২২
পৃথিবীর কোথাও আজ সমাজের সাধারণ জনগণের নিয়ে কোনো শাসকগণই ভাবছেন না!
.
২৩
প্রচারের ঢক্কা নিনাদে দেশের ক্ষত ঢেকে দিচ্ছে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা!
সঙ্গে মিডিয়া…
.
২৪
আমাদের দেশে সবকিছুতেই দেখি—চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে!
.
২৫
মানুষ পেছনে যায়, আবার সামনে এগিয়েও আসে
.
২৬
মানুষের এমনই ইচ্ছা যে, মৃত্যুর পরেও সে
ভোগবাদী হতে চায়!
.
২৭
হাড়ভাঙা খাটুনি সহ্য হয় না!
হাড়ভাঙা বিশ্রামও সহ্য হয় না!
.
২৮
লেখাটা লেখকের জীবন—যা সে নিজেই সম্পাদনা করে, বারবার ঘুরেফিরে নিজেকে আত্মমোচন করে।
.
২৯
ধর্ম হলো সেই মিথ্যা—যা বারবার মগজে ঢুকিয়ে সত্যকে মেরে ফেলে।
.
৩০
মানুষের বুক-ফাটা ব্যাপার লইয়া ছেলেখেলা করার জন্যই দেশের আজ এই দশা! নির্লজ্জতার একটা সীমা আছে, তাহা আমরা ছাড়াইয়া গিয়াছি, যে কোনো উপায়ে বাণিজ্য!
নহিলে একদা যমুনালাল বাজাজ আর গান্ধী মিলিয়া স্বদেশি আন্দোলনের সময় কোটি টাকার তুলা বেচিয়া লাভ করেন?
তাহারই শি়ক্ষা আমাদের বর্তমান নেতাগণ মানিয়া চলিতেছেন!
.
৩১
দৃষ্টিভঙ্গির বদল না-হলে জীবনটাও বদলায় না!
.
৩২
আপনি আবেগপ্রবণ, সরল বিশ্বাসী হলে
প্রতিপদে আঘাত পাবেন, আর প্রতারিত হবেন!
.
৩৩
হিন্দুবাদীরা ভাবুন, এইভাবে দলিতের ওপর অত্যাচার করলে,
একদিন হিন্দুর সংখ্যা কমে যাবে!
.
৩৪
বিশ্বাস করতাম। কিন্তু তারা একদা অন্য অর্থনীতি, অন্য সমাজ নির্মাণের অঙ্গীকার করে প্রতিস্পর্ধী রাজনীতির পতাকা হাতে নিয়ে ক্ষমতাবানদের সমস্ত দমন পীড়ন, প্রলোভনের মুখের ওপরে সজোরে এবং সগর্বে প্রকাণ্ড ‘না’ ছুঁড়ে দিয়ে সমাজ বদলের পণ করেছিলেন, দরিদ্র মানুষের কল্যাণ সাধনকে একমাত্র আরাধ্য করেছিলেন, তারাই যখন নান্যঃ পন্থাঃ অবলম্বন করে নিজেরাই যখন ভূপতিত হলেন
তখন আমার মতিভ্রম হয়! স্বপ্ন ভঙ্গের সর্বনাশা যন্ত্রণাবোধ কুরে খায়!
এখন ভয়ানক পরিণতির দিকে তাকিয়ে বোবা হয়ে যাই! আমার বিশ্বাস এখন অবিশ্বাসে! সংযত নেই, সংবৃত নেই, শুভবুদ্ধি, সুচেতনা মরে যাচ্ছে!
যন্ত্রণার দ্বান্দিকতা ছাড়া কি জীবনযাত্রার অগ্রগতি নেই?
.
৩৫
হাতি কাদায় পড়লে ব্যাঙেও লাথি মারে!
বোঝো ঠ্যালা! অতএব, এবার হাতিগণ সাবধান!
.
৩৬
নিজেকে ভেঙে, সাঁচ ভেঙে নতুন বাঁক যার রচনায়, সেই লেখক কালান্তরে যাবে…
.
৩৭
নারীর কী অলঙ্কার লাগে?
জগতের সেরা অলঙ্কার তার দুটি চোখে!
.
৩৮
কার টিকি যে কোথায় বাঁধা ভাবতে গেলে ধন্দ হয়!
কিছু লেখক বুদ্ধিবৃত্তি বড় হিন্দু মুসলিম করে—তাদের মজ্জায় কি মানুষ নেই?
.
৩৯
কেউ কর্তব্য অস্বীকার করলে,
কর্তব্য একদিন তাকেও অস্বীকার করে!
.
৪০
আমাদের ব্রিটিশ কলোনিয়াল থেকে আজও মুক্তি হলো না!
.
৪১
সরকারের বিরুদ্ধে বলা মানে সরকারের বিরুদ্ধে নয়,
দেশের জন্য বলা!
.
৪২
ক্ষমতার নানা প্যারাডক্সে বিভ্রান্ত! আশা হত!
জীবন ও মৃত্যুর মাঝে ঝুলে আছি আমরা!
.
৪৩
রাজনীতি আমাদের শেষ করবে…
ডায়েরির ছেঁড়া পাতা
৪৪
আর বাঁচি না চাচি,
জান খেয়ে বেঁচে আছি!
ডায়েরির ছেঁড়া পাতা
৪৫
‘সুখং হি দুঃখান্যনুভূয় শাভতে’
অর্থাৎ দুঃখ ভোগের পর শোভনীয় হয় সুখ।
অতএব, আশা সুখের দিন আসছে…
…………………
পড়ুন
কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের একগুচ্ছ কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের ক্ষুধাগুচ্ছ
লকডাউনগুচ্ছ : সুনীল শর্মাচার্য
সুনীল শর্মাচার্যের গ্রাম্য স্মৃতি
গল্প
এক সমাজবিরোধী ও টেলিফোনের গল্প: সুনীল শর্মাচার্য
আঁধার বদলায় : সুনীল শর্মাচার্য
প্রবন্ধ
কবির ভাষা, কবিতার ভাষা : সুনীল শর্মাচার্য
মুক্তগদ্য
খুচরো কথা চারপাশে : সুনীল শর্মাচার্য
‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ পাঠ্যান্তে
ভারতের কৃষিবিল যেন আলাদিনের চেরাগ-এ-জিন
বাঙালিদের বাংলা চর্চা : খণ্ড ভারতে
ভারতে চীনা দ্রব্য বয়কট : বিষয়টা হাল্কা ভাবলেও, সমস্যাটা কঠিন এবং আমরা
রাজনীতি বোঝো, অর্থনীতি বোঝো! বনাম ভারতের যুবসমাজ
ভারতে শুধু অমর্ত্য সেন নয়, বাঙালি সংস্কৃতি আক্রান্ত
ভারতের CAA NRC নিয়ে দু’চার কথা
ভারতের এবারের বাজেট আসলে অশ্বডিম্ব, না ঘরকা না ঘাটকা, শুধু কর্পোরেট কা
ইন্ডিয়া ইউনাইটেড বনাম সেলিব্রিটিদের শানে-নজুল
11 thoughts on “ডায়েরির ছেঁড়া পাতা”