shubhobangladesh

সত্য-সুন্দর সুখ-স্বপ্ন-সম্ভাবনা সবসময়…

বাঙালিদের বাংলা চর্চা : খণ্ড ভারতে

Retail talk all around
How many problems I am in
খুচরো কথা চারপাশে

বাঙালিদের বাংলা চর্চা : খণ্ড ভারতে

সুনীল শর্মাচার্য

বাঙালিদের বাংলা চর্চা : খণ্ড ভারতে

বাঙালিদের বাংলা চর্চা বিষয়ে ভাবতে গিয়েই ওড়িশার কেরা বাঙালিদের কথা মনে এলো। জি এ গ্রিয়ারসন তাঁর ‘লিঙ্গুইস্টিক সার্ভে অফ ইণ্ডিয়া’ গ্রন্থের পঞ্চম খণ্ডে ওড়িশার কটক ও পুরী জেলায় বংশানুক্রমে বসবাসকারী বাঙালিদের কেরা বাঙালি (Kera Bengali) এবং তাঁদের ব্যবহৃত মিশ্রভাষাকে কেরো বাংলা বলে অভিহিত করেছিলেন।

১৮৭২ সালের জনগণনায় তিনি জানিয়েছেন, বাঙালিরা ৭/৮ প্রজন্ম কটকে বসবাস করছেন। ১৯৭৯-৮৬-র একটি ক্ষেত্রসমীক্ষায় দেখা গেছে—কটক, গোপালপুর, মাহাঙ্গা, কলরাবাঙ্ক, পুনাং, বাড়োবাগ প্রভৃতি গোটা ত্রিশেক গ্রামে প্রবাসী বাঙালি পরিবার রয়েছে এবং যারা দ্বিভাষা হিসেবে তখনো বাংলা ব্যবহার করেন।

স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের মুখের ভাষা মান্যচলিত বাংলার মতো নয়। বাংলার উপভাষা প্রভাবিত ওড়িয়া-মিশ্র বাংলা। অবশ্য বাঙালিদের শতকরা ৯৫ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষা পড়তে বা লিখতে পারেন না, কারণ ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ পর্ব থেকে নানা কারণে ওড়িশার বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলি উঠে যেতে থাকে।

অভিবাসনের সূত্রানুযায়ী প্রবাসী বাঙালিরা এর পর মান্যচলিত ওড়িয়াকেই প্রথম ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছেন। আর দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছেন ইংরেজি বা হিন্দিকে। কিন্তু বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশ সম্পর্কে সেই সময়ে তাঁদের আবেগও লক্ষ্য করা যায়, বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের মধ্যে।

পদমপুর বলে একটি গ্রামে মাত্র একটি পরিবার, যারা ভাষা-পরিবেশের প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে তখনো পরিবারের মধ্যে বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল।

দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভাষা হিসেবে বর্হিবঙ্গের বাঙালিদের বাংলা ভাষা শেখানোর চেষ্টা অবিলম্বে শুরু হওয়া উচিত। এর জন্য রাজ্যস্তরে বিধানসভাগুলিতে শুধু আইন প্রণয়ন করলেই হবে না, নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন ও নানা প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে—বাংলাভাষা ও বাঙালিদের স্বার্থে।

কেরা বাংলা ভাষায় সংগৃহীত একটা ছড়া এখানে মনে পড়লো। সঙ্গে ওড়িয়া ও বাংলায় তার উচ্চারণ-অনুগ অনুবাদও উল্লেখ হলো :

‘টাপুরটুপুর বানসি বাজে

অই তো বৃন্দাবন

রাধার কি খাইতে মন্

দিনের বেলায় আলু পোড়া

রাত্ তিরে বাইগন্।’

বাংলা চর্চা

মান্যচলিত বাংলায়—

‘টাপুরটুপুর বংশী বাজে

ওই তো বৃন্দাবন

রাধার কি খেতে মোন

দিনের ব্যালা আলু পোড়া

রাত্ তিরে বেগুন্।’

বাংলা চর্চা

আর মান্যচলিত ওড়িয়াতে—

‘টাপুরটুপুর বংসী বাজে

সেটি বৃন্দাবন

রাধার কি খাইবাকু মন

দিনরে আলু পোড়া

রাত রে বাইগণ।’

ওড়িয়া ভাষায় অভিজ্ঞ জনেরা নিশ্চয় বুঝতে পারবেন বাংলার সঙ্গে ওড়িয়ার ণ/ল/অ-এর উচ্চারণ পার্থক্য।

…………………

পড়ুন

কবিতা

সুনীল শর্মাচার্যের একগুচ্ছ কবিতা

সুনীল শর্মাচার্যের ক্ষুধাগুচ্ছ

লকডাউনগুচ্ছ : সুনীল শর্মাচার্য

গল্প

উকিল ডাকাত : সুনীল শর্মাচার্য

প্রবন্ধ

কবির ভাষা, কবিতার ভাষা : সুনীল শর্মাচার্য

ধর্ম নিয়ে : সুনীল শর্মাচার্য

মুক্তগদ্য

খুচরো কথা চারপাশে : সুনীল শর্মাচার্য

কত রকম সমস্যার মধ্যে থাকি

শক্তি পূজোর চিরাচরিত

ভূতের গল্প

বেগুনে আগুন

পরকীয়া প্রেমের রোমান্স

মুসলমান বাঙালির নামকরণ নিয়ে

এখন লিটল ম্যাগাজিন

যদিও সংকট এখন

খাবারে রঙ

সংস্কার নিয়ে

খেজুর রসের রকমারি

‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ পাঠ্যান্তে

মোবাইল সমাচার

ভালো কবিতা, মন্দ কবিতা

ভারতের কৃষিবিল যেন আলাদিনের চেরাগ-এ-জিন

বাঙালিদের বাংলা চর্চা : খণ্ড ভারতে

About The Author

শেয়ার করে আমাদের সঙ্গে থাকুন...