বাবার জন্য
মহুল মৃণালিনী রাই
বাবার জন্য
আমি দেখছিলাম দহনঘরটা জ্বলতে জ্বলতে লাল। আর সেই লালে মিশে গেল বাবা।
আমার হাতে তখনো তার পায়ের পাতার স্পর্শ। ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখেছিলাম শেষবারের মতো। কতটা ঠাণ্ডা। কতটা নিথর। কতটা সাড়হীন। বুঝিনি…
গোল করে কাটা নখ, স্পষ্ট আঙ্গুল আর গম রঙা পায়ের পাতাদুটো বড্ড প্রিয় ছিল। মাঝে মাঝে তাকিয়ে থাকতাম। কী সুন্দর!
আর কারোটা ঠিক ওরকম নয়।
ছোটবেলায় আমার পায়ের নখ কেটে দিত বাবা। প্রতিবার সেই হরিণের গল্পটা…
সোনালী শিংয়ের হরিণ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকত নদী জলের আয়নায়। মনে মনে ভাবত, ‘কী সুন্দর আঁকাবাঁকা শিং আমার।’ পায়ের খুরগুলো তার একদম পছন্দ হতো না।
একদিন শিকারী এলো। ছুট ছুট দে ছুটে যখন শিকারীর নাগাল প্রায় পেরিয়ে এসেছে, তখন বাধ সাধলো তার শিং। নরম সবুজ কলাপাতায় ফুঁড়ে জড়িয়ে গেল গাছে। শিকারীর কাছে এবার তার সব দৌড় ব্যর্থ…
গল্প ফুরিয়ে যেত পায়ের চাকা হয়ে ওঠার বিশ্বাসে।
সেই চাকা এখন নিঃসাড়। পথ তার ফুরিয়ে গিয়েছে অনেকক্ষণ। শুধু আমার হাতের পাতায় তার দাগটুকু রয়ে গেছে অন্তিমে…
সংশ্লিষ্ট আরো লেখা
শিব্রাম বলেছিলেন, কিছু বাস্তব সত্য
বিসর্জন
বয়স বাড়ে কখন, নোটবই ও অন্যান্য