উচ্চ ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম বন্দর : বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্যের মজুদে বিস্ফোরণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে এখন দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব রাসায়নিক পণ্য অবহেলায় পড়ে আছে বন্দরের বিভিন্ন শেডে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, আমদানির পরে বছরের পর বছর খালাস, নিলাম কিংবা কোনো প্রকারে ধ্বংস না-করা।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, প্রায় ৩০ বছর আগের আমদানিকৃত রাসায়নিক পণ্যও—এখনো বন্দরে পড়ে আছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র মতে, বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের আমদানিকারকরা আমদানির অনুমতি থাকা বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পণ্য, বিস্ফোরক, গ্যাস, নানা ধরনের দাহ্য ও তেজস্ক্রিয় পণ্য আমদানি করে থাকেন।
এসব পণ্য অনেক আমদানিকারক নিয়ম মেনে বন্দর থেকে খালাস করে নিয়ে যান। আবার অনেক পণ্য নানা জটিলতায় বন্দরে আটকে থাকে।
অনেকপণ্য অবৈধভাবে আমদানি হওয়ায় সেগুলি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আটক করে। আবার অনেক পণ্য মামলা জটিলতার ফাঁদে বন্দরে আটকে থাকে বছরের পর বছর।
এসব পণ্য খালাস না-হলে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিলাম কিংবা ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে প্রায় শতাধিক কন্টেইনার বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্যের মজুদ রয়েছে—যা আমদানিকারকরা খালাস করেনি, আবার নিলামে বিক্রি বা ধ্বংসও করেনি কর্তৃপক্ষ।
এই রাসায়নিক পণ্যের কন্টেইনারগুলো ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঝুঁকিতে ফেলেছে চট্টগ্রাম বন্দরকে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বন্দরে নিলাম ও ধ্বংসযোগ্য রাসায়নিক বা দাহ্য পণ্যের মজুদ থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এসব পণ্য ধ্বংস করা বা নিলামে বিক্রির দায়িত্ব কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। এ-ব্যাপারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দাপ্তরিকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত ৩ মাসে পর পর দুটি চিঠি দেওয়া হয়েছে কাস্টমসকে। যেন ধংসযোগ্য পণ্য দ্রুত ধংস করা হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব হাসান জানান, যেসব পণ্য নিলামযোগ্য বা ধ্বংস যোগ্য তা নিয়ম মেনেই নিলামে তোলা হচ্ছে অথবা ধংস করা হচ্ছে।
কিন্তু মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের জটিলতার কারণে অনেক পণ্য যেমন নিলামে তোলা যাচ্ছে না, আবার ধ্বংসও করা যাচ্ছে না।
দীর্ঘদিন ধরে বন্দর শেডে আটকে থাকা অনেক রাসারায়নিক পণ্যের উপযুক্ত তথ্য না-থাকায় এসব রাসায়নিকের ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না বা বিলম্ব হচ্ছে।
তবে বন্দর ও কাস্টমস যৌথ সমন্বয়ের মাধ্যমে এ-ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে বলে কাস্টমস কমিশনার জানান।
উল্লেখ্য, বন্দরের ১৪টি শেডে ২৫ থেকে ৩০ হাজার আমদানিপণ্য বোঝাই কন্টেইনার মজুদ থাকে। এর মধ্যে বর্তমানে নিলাম ও ধ্বংসযোগ্য পণ্যের মজুদ থাকা কন্টেইনারের সংখ্যা ৩ থেকে ৪ হাজার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে রক্ষা করতে এবং এখানে কর্মরত শ্রমিক ও বন্দর কর্তৃপক্ষের জীবন বাঁচাতে এখনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া না-হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—যা অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে আনবে।
—বিশেষ প্রতিবেদক। সূত্র : রাইজিংবিডি ও গুগল
সংশ্লিষ্ট আরো লেখা
করোনায় আরো ১৭৮ জনের মৃত্যু
টানা ২০ দিন পর দৈনিক মৃত্যু দুইশ’র নিচে ১৯৭ জন
করোনায় আরো ২১৫ জনের মৃত্যু