তিনটি বৃষ্টির কবিতা
সুদীপ্ত বিশ্বাস
তিনটি বৃষ্টির কবিতা
বৃষ্টি এলে
বৃষ্টি এলে বুকের ভেতর গোলাপ কুঁড়ি ফোটে
বৃষ্টি এলে মনটা বড় উদাস হয়ে ওঠে।
বৃষ্টি এলে শিউলিতলায়, ছাতিমগাছের ডালে
মনটা বড় কেমন করে বৃষ্টি-ঝরা কালে।
এখন তুমি অনেকদূরে না জানি কোনখানে,
ভিজছো কিংবা গুনগুনিয়ে সুর তুলেছো গানে।
তোমার গানের সেই সুরই আজ বৃষ্টি হয়ে এসে
টাপুরটুপুর পড়ছে ঝরে মেঘকে ভালোবেসে।
মেঘ বিরহী, কান্নাটা তার বৃষ্টি হয়ে ঝরে
তোমার বুঝি মেঘ দেখলেই আমায় মনে পড়ে।
.
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে
বৃষ্টি রে তুই আয় না ঝেঁপে আমাদের এই গাঁয়ে
দে ছুঁয়ে দে মিষ্টি ছোঁয়া রাঙা মাটির পায়ে।
ওই যে মাটি, মাটির ভেতর শিকড় খোঁজে জল
বল না বৃষ্টি ওদের সঙ্গে খুশির কথা বল।
টিনের চালে অল্প আলোয় যখন ঝরিস তুই
পুকুর ভরে শালুক ফোটে বাগানজুড়ে জুঁই।
আকাশ তখন সাত রঙেতে রামধনুটা আঁকে
সেই খুশিতে টুনটুনিটা টুটুর টুটুর ডাকে।
রামধনুর ওই সাতটি রঙে মন হারিয়ে যায়
অনেক দূরে তারার দেশে মেঘের সীমানায়।
মাছের খোঁজে পানকৌড়ি ওই তো দিল ডুব
বৃষ্টি নামুক বৃষ্টি নামুক টাপুর টুপুর টুপ…
.
বৃষ্টি
বৃষ্টি রে তুই মিষ্টি ভারি, তোর গলাতে সেই চেনা সুর!
ঘরের ছাদে গাছের পাতায়, বাজছে রে তোর পায়ের নূপুর!
বৃষ্টি কোথায় পেলি এ গান বল না বৃষ্টি বল না আমায়,
একলা যখন কাঁদে এ মন, তোর গানে সেই কান্না থামায়।
বৃষ্টি রে তুই থাকিস কোথায় আকাশপারে মেঘের দেশে
কী আছে সেই অচিন দেশে, বল না বৃষ্টি মিষ্টি হেসে।
টিপ-টিপ-টিপ বৃষ্টি রে তুই, ঝর না এখন অঝোর-ধারায়,
রিম-ঝিম-ঝিম নূপুর বাজে, তোর সুরে এই মনটা হারায়।
বৃষ্টি রে আর কেউ না বুঝুক, তুই তো বুঝিস মনটা আমার,
তোর সুরে আজ উঠছে বেজে, বাউলমনে ধ্রুপদ-ধামার।
মনটা যে চায়, যাই চলে যাই, তোর সাথে আজ অনেক দূরে
নদী-পাহাড়-বন পেরিয়ে, নতুন দেশে, অচিনপুরে।
সেই দেশে এক দুঃখী মেয়ে, আমার মতোই একলা ভারি,
সবাই তাকে ভুল বুঝেছে, তার সাথে ভাই দিস না আড়ি।
রিম-ঝিম-ঝিম গানটা গেয়ে, আমার কথা বলবি তাকে,
মনে আমার কষ্ট কত, বুঝিয়ে দিস গানের ফাঁকে।
বৃষ্টি আমি সে দেশ যাব, রিম-ঝিম-ঝিম গানের সুরে
চল না বৃষ্টি চল না নিয়ে, সেই দেশে সেই অচিনপুরে…
…………………
পড়ুন
কবিতা
সুদীপ্ত বিশ্বাসের ছয়টি অনুভবের কবিতা
ছড়া-কবিতা
সংশ্লিষ্ট আরো লেখা
সুনীল শর্মাচার্যের দশটি কবিতা
নাসিমা খাতুনের কবিতা
সুনীল শর্মাচার্যের কবিতা